যদিও প্রাথমিকভাবে এসি বিস্ফোরণের এ ঘটনাটিকে কয়েকজন আহত হওয়ার মতো একটি সাধারণ পরিস্থিতি বলে মনে হয়েছিল কারণ গত কয়েক দশকে দেশে এ ধরনের কোনো বিপর্যয়কর বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি।
শুক্রবার রাতের এ ঘটনায় মসজিদে থাকা প্রায় ৪০ জন মুসল্লি দগ্ধ হন, যার মধ্যে ৩৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়।
আহতদের মধ্যে ঢাকায় নেয়ার পথে রাতেই একজন মারা যান এবং শনিবার ভোরে বার্ন ইনস্টিটিউটে মৃত্যু হয় আরও ১০ জনের। আহতদের বেশিরভাগেরই শরীরের ৭০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে।
এ ধরনের ঘটনা এড়াতে এখন সময় এসেছে এসি বিস্ফোরণের পেছনের মূল কারণগুলোর দিকে নজর দেয়ার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসির কমপ্রেসার বিকল হয়ে বিস্ফোরণগুলো ঘটে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক হিটিং, কুলিং অ্যান্ড রেফ্রিজারেশন সংস্থা অ্যারিস্টায়ারের মতে, নিয়মিত এসির ভালো যত্ন নিলে ব্যবহারকারীরা বিস্ফোরণ থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
সংস্থাটি বিস্ফোরণের কিছু প্রাথমিক কারণ উল্লেখ করে বছরে কমপক্ষে দুইবার এসি সার্ভিস করার পরামর্শ দিয়েছে।
ময়লা কয়েল: কনডেনসার কয়েলে ময়লা জমলে এয়ার কন্ডিশনারটি সিস্টেম থেকে পর্যাপ্ত তাপ বের করে দিতে পারে না এবং স্থান শীতলীকরণের জন্য এটি ক্রমাগত চালাতে বাধ্য হয়। বর্ধিত চাপ এবং তাপমাত্রায় কমপ্রেসর অত্যধিক গরম হয়ে বিস্ফোরিত হতে পারে।
ক্ষতিগ্রস্ত রেফ্রিজারেন্ট লাইন: এসির রেফ্রিজারেন্ট লাইনগুলো অবরুদ্ধ বা হলে লক্ষ্য করা যায় যে ইউনিটটি কার্যকরভাবে ঠান্ডা স্থান করতে পারছে না। সমস্যাটি ঠিক করা না হলে এর ফলেও বর্ধিত চাপ এবং তাপমাত্রায় কমপ্রেসর অত্যধিক গরম হয়ে বিকল বা বিস্ফোরিত হতে পারে।
পাইপে ছিদ্র: এসির ভেতরের পাইপের কোথাও ব্লকেজ হলে এসির ভেতরে হাই প্রেসার তৈরি হয়ে কম্প্রেসর বিস্ফোরিত হতে হতে পারে।
সক্ষমতার চেয়ে বেশি রেফ্রিজারেন্ট: কম্প্রেসরের সক্ষমতার চেয়ে বেশি রেফ্রিজারেন্ট চার্জ করলে হাই প্রেসার তৈরি হয়ে। এর ফলেও ঘটতে পারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ।
বৈদ্যুতিক সমস্যা: বৈদ্যুতিক সমস্যার কারণে অ্যাসিড তৈরি হতে পারে যা কমপ্রেসর ছাড়াও এসির অন্যান্য অংশেরও বেশি ক্ষতি করে। কারও এসির কমপ্রেসর বিকল হয়ে গেলে তার উচিত এই এসিডের উপস্থিতি টেকনিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নেয়া।
পাওয়ার ক্যাবল: ভালো মানের এবং সঠিক স্পেকের পাওয়ার ক্যাবল ব্যবহার না করলে উচ্চ চাপে যেকোনো সময়ই এসি বিস্ফোরিত হতে পারে।
এছাড়া নিম্নমানের অখ্যাত কিংবা নকল ব্র্যান্ডের এসি বা ব্যবহার করা, সঠিক রেটিংয়ের সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার না করাসহ বিভিন্ন কারণে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে।
তাই এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে নিয়মিত (বছরে অন্তত দুইবার) দক্ষ সার্ভিস এক্সপার্ট দিয়ে এসিটি পরীক্ষা করে নেয়া উচিত।